অমিয় চক্রবর্তীর বাংলাদেশ কবিতায় স্বদেশের সংস্কৃতি ও সৌন্দর্য

কবিতাঃ বাংলাদেশ

কবিঃ অমিয় চক্রবর্তী


কল্যাণীর ধারাবাহী যে_মাধুরী বাংলা ভাষায়

গড়েছে আত্মীয় পল্লী,যমুনা-পদ্মার তীরে তীরে

রুপোলি জলের ধারে,আম-জাম-নারকেল ঘেরা

আমন ধানের খেতে শ্রুতিময় তারি অন্তর্লীন

বাণী শোনো প্রাত্যহিক-বহু মিশ্র প্রাণের সংসারে

সেই বাংলাদেশে ছিল সহস্রের একটি কাহিনী


কোরানে পুরাণে শিল্পে,পালা-পার্বণের ঢাকে ঢোলে

আউল বাউল নাচে;পুন্যাহের সানাই রজ্ঞিত

রোদ্দুরে আকাশতলে দেখ কারা হাটে যায়,মাঝি

পাল তোলে,তাঁতি বোনে,খড়ে-ছাওয়া ঘরের আঙনে

মাঠে ঘাটে-শ্রমসঙ্গী নানাজাতি ধর্মের বসতি


চিরদিন বাংলাদেশ_

ওরা কারা বুনো দল ঢোকে

এরি মধ্যে (থামাও,থামাও);স্বর্ণশ্যাম বুক ছিঁড়ে

অস্ত্র হাতে নামে সান্ত্রী কাপুরুষ,অধম রাষ্টের

রক্ত পতাকা তোলে কোটি মানুষের সমবায়ী


সভ্যতার ভাষা এরা রদ করবে ভাবে,মরু-পশু

মারীর অন্ধতা ঝড়ে হানে অসহায় নরনারী

অলভ্য জয়ের লোভে,জ্বালায় শহর,গ্রামে গ্রামে

প্রাচীন সংহতি ভেঙে ভগ্নস্তূপে দূরের উল্লুক

বাঁধে কেল্লা,(পারবে না,পারবে না,)পাপাশ্রয়ী পরজীবী


যতই লুণ্ঠন করে শস্য পাট পণ্য,ঘরে ঘরে

ছাড়ায় অমেয় শোক,ধর্মনাশ হত্যার ছায়ায়

ঘেরে আর্ত গৃহস্থালি,চতুর্গুণ হিন্দু মুসলমান

বাংলার বাঙালি তত জানে জন্মমৃত্যুর বন্ধনে

অভিন্ন আপন সত্তা,


লক্ষ লক্ষ হা-ঘরে দুর্গত

ঘৃণ্য যম-দূত-সেনা এড়িয়ে সীমান্তপারে ছোটে,

পথে পথে অনশনে অস্তিম যন্ত্রণা রোগে ত্রাসে

সহস্রের অবসান,হন্তারক বারুদে বন্দুকে

মূর্ছিত-মৃতের দেহ বিদ্ধ করে ,হত্যা-ব্যবসায়ী


বাংলাদেশ-ধ্বং-কাব্যে জানে না পৌঁ ছল জাহান্নামে

এ জন্মেই;

বাংলাদেশ অনন্ত অক্ষত মূর্তি জাগে।।


কবি পরিচিতি

অমিয় চক্রবর্তীর বাংলাদেশ কবিতায় স্বদেশের সংস্কৃতি ও সৌন্দর্য
Next Post
No Comment
Add Comment
comment url